মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ভারী বৃষ্টিপাত ও হাওর অঞ্চলে বন্যার সম্ভাবনা থাকায় কৃষকদের জমির ধান কেটে সহযোগিতা করতে মাঠে নেমেছে স্বেচ্ছাসেবকরা। আর এই স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কান্তি দাশের নেতৃত্বে শাখার বিভিন্ন দায়িত্বশীল সহ বিভিন্ন সংগঠন ও কৃষকরা প্রখর রোদ উপেক্ষা করে কৃষকদের ধান কেটে বাড়ি পৌছে দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের হাইল হাওর সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় প্রায় শতাধিক মানুষ হাতে কাস্তে নিয়ে ধান কাটছে। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে তারা একের পর এক কৃষকের জমির ধান কেটে দিচ্ছেন। ইউএনও সেই কাজে ফাকি দিচ্ছেন না। টানা দুইঘন্টা নিজে মাঠে থেকে ধান কেটে চলেছেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেছার উদ্দীন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি প্রমুখ।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ মৌসুমে উপজেলার ৯ হাজার ৬ শত ৫২ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাওর অঞ্চলের নিচু জায়গায় ৩ হাজার ৭শত ২৭ হেক্টর জমি রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি সপ্তাহে সিলেট অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত ও হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে আামাদের হাওর অঞ্চলের ধান প্রায় ৮০ থেকে ১০০ ভাগ পেকে গেছে। হঠাৎ যদি ভারী বৃষ্টিপাত হয় তাহলে এই পাকা ধানগুলো পানির নিচে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের সাথে আলোচনা করে সীদ্ধান্ত নিলাম আমরা যদি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কৃষদের কাছে গিয়ে এই ধানগুলো কেটে দিয়ে আসি তাহলে তাদের অনেক উপকার হবে। আমরা সবাই মিলে ধান কাটা শুরু করি। এভাবে আগামী কয়েকদিন একেক জায়গায় আমাদের এই স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটা চলবে। আগামীকাল (শুক্রবার) আমাদের ধান স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটার উদ্যোগ রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাস বলেন, গত বছর আমরা আমাদের শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দসহ কৃষকের পাশে থেকে তাদের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলাম। এ বছরো আমরা তাই করছি। যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে তাহলে আগামী তো আমরা এভাবেই কৃষকের পাশে থাকবো।